• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

কেমন হবে রোজায় খাদ্যাভ্যাস

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

রমজানে কী খাব? কী খাব না? প্রথমেই এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ায় আমাকে অনেক হৃদরোগীদের খাদ্যের উপদেশ দিয়ে থাকতে হয় এবং এ সব রোগীর মধ্যে অনেকে আবার উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকেন। তাই এসব কিছু বিবেচনা করে আমাকে তাদের খাদ্য উপদেশ প্রদান করে থাকতে হয়। অনেকের প্রশ্ন থাকে ইফতারিতে ছোলা, বেগুনি, পেঁয়াজু, বড়া, পাকুরা, জিলাপি ইত্যাদি খেতে পারব কিনা? উপরোক্ত খাদ্যবস্তুগুলো আমাদের বাঙালি মুসলিম সামাজিকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তাই এ ধরনের খাদ্যবস্তু হৃদরোগীদের জন্য কিছুটা ক্ষতিকর হলেও একেবারে বন্ধ করা সাধারণত সমীচীন হয় না। তবে হৃদরোগীদের তেলে ভাজা খাদ্যবস্তু যতটা সম্ভব কম পরিমাণে গ্রহণ করে, তরমুজ, ক্ষিরা, শশা, টমেটো, আপেল, কমলা, নাশপাতি, পিয়ারা, বড়ই, আমড়া, বেল ও লিচু কম পরিমাণে আম, কাঁঠাল গ্রহণ করে খাদ্যকে সুষম রাখতে হবে। রোজার মাসে দই, মিষ্টি, পায়েস, ফিরনি, নুডলস, সেমাই, তেহারি, বিরিয়ানি, ভুনা খিচুড়ি, কোরমা, রেজালা, রোস্ট, পোলাও ইত্যাদি খাদ্য আমাদের সমাজে খুবই প্রচলিত খাদ্যবস্তু। এ ধরনের খাদ্যবস্তু গ্রহণ না করলে মনোকষ্ট বাড়ে যা হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকারক আর এসব খাদ্যবস্তু বেশি পরিমাণে গ্রহণের ফলে হৃদরোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে হৃদরোগ আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
তবে এ ধরনের খাদ্যবস্তু একবারে বর্জন করাও যেহেতু সম্ভব নয়, তাই প্রতিদিন উল্লিখিত খাবারের মাঝ থেকে একটি অথবা দুটি আইটেমের বেশি কোনোক্রমেই গ্রহণ করা যাবে না এবং তার পরিমাণও স্বাভাবিকের চেয়ে একটু কম পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ইফতারে একদিন ছোলা ও পেঁয়াজু খেলে অন্য আইটেম যেমন বেগুনি, বড়া, জিলাপি, পাকুরার মতো অন্য আইটেম খাওয়া ঠিক হবে না এবং রাতের খাবারে একটি বিরিয়ানি খেলে ওই দিন দই, মিষ্টি, রোস্ট, রেজালা, কোরমা ইত্যাদি খাওয়া যাবে না মোট কথা আপনার খাদ্য গ্রহণের একটা ভারসাম্য রক্ষা করে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, তা না হলে আপনার খাদ্য গ্রহণ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে এবং আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। অনেকের মাঝে একটা ভ্রান্ত ধারণা থাকে যে, রোজার সময় খাদ্য গ্রহণের কোনো রকম হিসাব করা বা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন নেই, মানুষ ইচ্ছামাফিক অধিক খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
যা মোটেও ঠিক নয়। অধিক খাদ্য গ্রহণের ফলশ্রুতিতে কারও কারও রমজান মাসে ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মোদ্দাকথা হলো, যে কোনো সময় আমরা আমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো ধরনের খাবার গ্রহণ করতে পারব না। আর যদি তা গ্রহণ করি ফলশ্রুতিতে আমাদের ওজন বাড়বে, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়বে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবে অথবা যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের রক্তে সুগার অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যেতে পারে।
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে। উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত হতে পারে এবং যারা উচ্চরক্ত চাপে ভুগছেন তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে, কাজেই রোজার মাসে অধিক খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা এবং নিয়মিত কায়িক শ্রম বজায় রাখা স্বাস্থ্য সম্মত। গ্রামবাংলায় একটা সাধারণ কথা প্রচলিত আছে যে, আপনি যতটুকু হজম করতে পারবেন ঠিক ততটুকুই খাবেন, তার চেয়ে বেশি নয়। এই কথাটাকেই বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে বলতে গেলে এমনভাবে বলতে হবে যে আপনার দৈনিক যতটুকু এনার্জি বা শক্তি বা ক্যালরির প্রয়োজন আপনি যদি ততটুকুই গ্রহণ করেন তবে কি খাদ্যবস্তু খেলেন তা নিয়ে ততটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো দরকার নেই কারণ আপনার শারীরিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করায় খাদ্যের পুরা অংশই শারীরিক প্রয়োজনে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই এসব খাদ্যবস্তুর নির্যাস শরীরে জমা হয়ে থাকার কোনো অবকাশ নেই এবং এসব খাদ্যবস্তুর নির্যাস জমা হয়ে শারীরিক ক্ষতি সাধিত হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই মনে রাখতে হবে যে, কি বস্তু দিয়ে আপনি আহার সম্পন্ন করলেন তা বড় কথা নয়, তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো আপনি কতটুকু পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করলেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে কোনো ধরনের খাদ্য গ্রহণ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য বিপদের কারণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ