মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: ক’দিন ধরে হবিগঞ্জে বৃদ্ধি পেয়েছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো হবিগঞ্জ জেলা।
গত শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে কুয়াশা। রাত ৮টার পর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো হবিগঞ্জ জেলা। সেই সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত।
সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাত ১০টার মধ্যেই জনশূন্য হয়ে পড়েছে শহরের ব্যস্ত মোড়সমূহ-সহ শহরের বিভিন্ন অলিগলি। মধ্যরাত পর্যন্ত যেসব দোকানপাট খোলা থাকে তার অধিকাংশই বন্ধ। চারদিকে নিশ্চুপ-নিরবতা। কোথাও কোনো সাড়াশব্দ নেই। ঘরের চালে বৃষ্টির ফোটার মত শব্দ শুনতে পাচ্ছেন শুধু তারাই যাদের মাথার ওপর রয়েছে কনক্রিটের ছাদের বদলে টিনের চালা।
শহরের মধ্যপাড়ার মুদি দোকানী বাবুল জানান, অন্য সময় রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। সবসময় দোকানে কাস্টমার আসেন। আজ তীব্র শীত আর কুয়াশার পরিমাণ এত বেশী, রাস্তা-ঘাট জনমানব শূন্য। তাই রাত ৯টার আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় অবস্থান করছি।
শহরের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদারি ব্যবসায়ী ফেরদৌস আহমদ চৌধুরী তুষার জানান, হাতে কিছু কাজ থাকলেও তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে ঘরের বাইরে থাকার কোনো উপায় নেই। তাই রাত ৮টার আগেই বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের সময় দিচ্ছি।
এদিকে, একই চিত্র ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন জেলার মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলায়। মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘন্টা মানুষের আনাগোনা চলতে থাকে। শহরের মোড়ে মোড়ে কিছু হোটেল, কনফেকশনারী, পানের দোকান, ফলের দোকান সারারাত খোলা থাকলেও বর্তমানের চিত্র একদমই আলাদা। এ যেন অপরিচিত কোনো শহর। কোনো মিল নেই ক’দিন আগের সঙ্গে।
যে মহাসড়কে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের ব্যস্ততায় গভীর রাত পর্যন্ত মহাসড়ক পার হতে বেশ সময়-সাবধানতা অবলম্বন করতে হতো, সে মহাসড়ক দেখে মন হচ্ছিল যেন হরতাল চলছে। দীর্ঘসময় পরপর চলছে গাড়ী। যাত্রী থাকায় সারারাত বাসস্টান্ড-সড়কগুলোতে রিক্সা- ভ্যান চলাচল করলেও এখনকার চিত্র উল্টো। দিনের চিত্র ভিন্ন হলেও সারাদিন দেখা মিলছে না সূর্যের।
অপরদিকে, গরম কাপড়ের স্বল্পতায় দুর্ভোগে পড়েছে জেলায় বসবাসকারী অতিদরিদ্র মানুষজন। শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারছেন না তারা। এছাড়া ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমিতে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শীতের তীব্রতায় কোল্ড ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে হাসপাতালে।
বাহুবল উপজেলা থেকে ৩ মাসের বাচ্চা নিয়ে আসা আবু জাহির বলেন, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে সিটতো নাই ই ফ্লোরেও জায়গা পাচ্ছি না, শুধু ঠান্ডার রোগিই বেশি।