শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ বছর হাওরের অন্যান্য জাতের ধানে প্রচুর চিটা হলেও ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ ধানের বাম্পার ফলন হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ধান হয়েছে ৩৪ মন।
সূত্রমতে কৃষকের মাঠের ধান বন্যার হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে কাজ শুরু করে এসেড হবিগঞ্জ। জাপানী আর্থিক ও নাগুরাস্থ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কারিগরী সহযোগিতায় কৃষকদের নিয়ে শুরু হয় একটি প্রকল্প। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ ও আব্দুল্লাহপুর গ্রামের ১০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশেষ সময়ক্রম নির্ধারণ করে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ ধান চাষ শুরু করা হয়। এ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ২০১৮ সালে বিঘা প্রতি ৩৩ মন ধান ফলন রেকর্ড করা হয়।
চলতি বছর বোরো মৌসুমে একই কৃষকদের নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ ও ব্রি ধান-৮৯ চাষ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ১০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ, ৫০ জন কৃষককে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ এর বীজ, ৫০ জন কৃষককে ব্রি ধান-৮৯ ধানের বীজ এবং ১০০ জন কৃষককে সার বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এবারও ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ ও ব্রি ধান-৮৯ ভাল ফলন হবে বলে মনে করা হচ্ছিল।
এ বছর চৈত্র মাসে বৃষ্টিপাত না হওয়াতে ফলন কম হওয়ার আশংকা করছিলেন সংশ্লিষ্ট সকলে। স্থানীয় বিজনা নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এসময় গুঙ্গিয়াজুরি হাওরের সেচ প্রদান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এমনি অবস্থায়ও ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ গাছের গোছা, বাড় এবং শীষ বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল। বৈশাখের দ্বিতীয় সম্পাহে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ কেটে ধান কাটা কার্যক্রম শুরু হয়। বাম্পার ফলনে অনেক কৃষক হাসিমুখে তাদের ধান গোলায় তোলেছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দাবাদ গ্রামের কৃষক মো: ইদ্রিছ আলী জানান, ২২ নভেম্বর বীজ বপনের মাধ্যমে ধান চাষ শুরু করেছিলাম। এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে ধান কাটার মাধ্যমে ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ মারাই করলাম। ১৫১ দিনে বিঘা প্রতি ৩৪ মন ফলন পেয়েছি। ব্রি ধান-৮৯ও খুব ভালো ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ২৬ মন। আগামীতে আরো অন্তত ৫ দিন আগাম চাষাবাদ শুরু করব। তবে বন্যায় ফসল হারানোর আর কোনো সম্ভাবনা থাকবে না।
হবিগঞ্জ নাগুরা ফার্মের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক অফিসার ডাঃ রফিকুল ইসলামজানান, হাইব্রিড ৫ ধান আগাম চাষ করা যেতে পারে। এটি আগাম বন্যা থেকে রক্ষা করে। তিনি বলেন, ধানের ব্রীজ বিজানো থেকে কর্তন পর্যন্ত এ জাতের ধান মাত্র ১৪০ দিনের ভিতরে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়। এ জন্য হবিগঞ্জের বিভিন্ন কৃষক এ জাতের ধান চাষাবাদে সম্ভাবনা দেখছেন। আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করে থাকি।