বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সৈয়দ নূর নামের এক কিশোর খুনের ঘটনায় ঘাতককে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপুর গ্রাম হতে ঘাতক গোলাম কাদির (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়।
গোলাম কাদির উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের মৃত নবীকুল মিয়ার ছেলে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পিপিএম যুগান্তরকে গোলাম কাদিরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, সীমান্ত নদী জাদুকাঁটায় বালুপাথর কোয়ারি দখলের জেরে প্রতিপক্ষ গোলাম কাদিরের ছুরিকাঘাতে উপজেলার ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের নাসির উদ্দিনের কিশোর ছেলে সৈয়দ নুর (১৫) খুন হন। এ ঘটনায় নুরের পিতা জখম হন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই ঘাতক গোলাম কাদির গোলাম কাদির বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।
পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে উপজেলা সদরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর গ্রাম হতে গোলাম কাদিরকে গ্রেফতার করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে এলাকাবাসী জানায়, নাসির উদ্দিন ও তার বড় ভাই মৃত নবীকুলের পরিবারের লোকজনের মধ্যে ঘাগটিয়া বড়টেক এলাকার পাকা সড়কের তীরে থাকা জাদুকাঁটা নদীর চরে বালু পাথর কোয়ারির জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল।
মঙ্গলবার সকাল হতে জাদুকাঁটা নদীর বিরোধপূর্ণ চরে কোয়ারি দখল করে নাসির উদ্দিনের বড় ছেলে গোলাম নুর ও মৃত নবীকুলের ছেলে গোলাম নুরের জেঠাত ভাই গোলাম কাদির উভয়েই অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলনে শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করে। এতে ১৩ সেট সেইভ মেশিন ব্যবহার করা হয়।
প্রতি সেট সেইভ মেশিনের বিপরীতে শ্রমিক সর্দারদের নিকট হতে নিয়মিত দেড় থেকে দুই হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিলেন গোলাম কাদির ও তার চাচাত ভাই গোলাম নুর।
মঙ্গলবার কোয়ারিতে লাগানো এক সেট সেইভ মেশিনের চাঁদার টাকা আদায় করাকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে গোলাম কাদির ও গোলাম নুর। এ নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম কাদির আদর্শ গ্রামে তার বাড়ির সামনে চাচা নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে ভাতিজা গোলাম কাদির চাচা নাসিরের বুকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। বাধা দিতে এগিয়ে আসলে নাসিরের কিশোর ছেলে সৈয়দ নুরের তলপেটে ছুরিকাঘাত করেন গোলাম কাদির।
আশেপাশে থাকা গ্রামের ও পরিবারের লোকজন পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নূরকে মৃত ঘোষণা করেন।