শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থানার ওসি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধান এ আদেশ দেন।
মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানে বাড়ি থেকে ধরে এনে ইউএনও অফিসে আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার কারনে এ আদেশ দেন আদালত।
আদেশের অনুলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত সোমবার দুপুরে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের একটি দল চুনারুঘাট এলাকার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার গোগাউড়া গ্রামের আব্দুল মন্নাফের পুত্র সোহেল মিয়া ওরফে রনি (২২), নুর মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র মাসুক মিয়া (১৮) এবং কাটাগিলা গ্রামের আন্দা মিয়ার পুত্র আজিজুল হক (২৭) কে ইয়াবা সেবন ও রাখার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
এ সংবাদ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলে বিষয়টি অত্র আদালতের স্টেনো স্টাইপিষ্ট মোঃ আল-আমিন হোসেনের নজরে আসে।
বিজ্ঞ আদালত এই আদেশে আরো উল্লেখ করা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ২৯ (১) ধারায় বর্ণিত আছে ‘‘মহাপরিচালক অথবা নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন অফিসার অথবা কোন পুলিশ অফিসার ব্যতিত অন্য কোন অফিসার কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করিলে অথবা কোন বস্তু আটক করিলে তিনি অতিবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার অথবা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিকটস্থ কোন অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে।
কিন্তু সংবাদদৃষ্টে উক্ত ব্যক্তিদেরকে থানায় হাজির করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয় না। এছাড়া সংবাদদৃষ্টে দেখা যায় যে, উক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১) সারণির ১০ (ক) উক্ত ব্যক্তিদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড করলেও শুধুমাত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারার ১৬, ১৭, ২১, ২৫ ও ৩২ এবং উপ ধারা (৫) ও (৬) যে ক্ষেত্রে কারাদন্ডের সর্বোচ্চসীমা ২ বছর ও ধারা ৩৯ ও ৪২ এর উপ ধারা (১) ভ্রাম্যমান আদালত সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৩৬ (১) সারণির ১০ (ক) ধারার উক্ত ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন এলাকা থেকে ধৃত করে থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে অবগত না করে এবং তাৎক্ষনিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর কার্যালয়ে হাজির করে দন্ড প্রদান করার বিষয়টি সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। উক্ত অপরাধ আমলে নেয়ার একমাত্র এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট আমলী আদালতের।
নিয়মঅনুযায়ী থানা এলাকায় সংঘটিত কোন আমলযোগ্য অথবা অআমলযোগ্য যে কোন অপরাধের ডায়রিভূক্ত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমলযোগ্য অপরাধ হলে ডায়রিভূক্ত করে তদন্তের অনুমতি চাইতে হয়। কিন্তু উক্ত মাদকসেবীদেরকে ধৃত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট হাজির করা হয়েছে কি না কিংবা থানায় হাজির করা হলে সংশ্লিষ্ট আমলী আদালতের গোচরে না এনে কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট দন্ড প্রদান করা হয়েছে উক্ত বিষয়ে কেন মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগকে অবগত করানো হবে না তৎমর্মে আদেশ প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ চুনারুঘাট থানা ও ইন্সপেক্টর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কার্যালয়কে নির্দেশ প্রদান করা হল। ব্যর্থতায় আইনগত আদেশ প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানার ওসি শেখ নাজমুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি না, আমার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন অভিযান করলে আমাকে জানানোর কথা। কিন্তু তারা আমাকে এ ব্যাপারে কিছুই জানান নি।