শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের সরঞ্জাম ক্রয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সরজমিন তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কর্মকর্তা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্ম সচিব (নির্মাণ ও মেরামত অধিশাখা) মোঃ আজম খান তদন্ত শুরু করেন।
সকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করার পর সেখানে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপন্থিত ছিলেন। প্রভাবশালী ডাক্তার ও কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ানের নির্দেশে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। অধ্যক্ষের রুমে বসেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ছুটিতে থাকলেও কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আবু সুফিয়ানসহ টেন্ডার কমিটির অন্যান্য সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা আজম খান কলেজ ও টেন্ডারের সাথে সম্পৃক্ত সকলের বক্তব্য শুনেন এবং টেন্ডারের বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করেন। একই সাথে যে সকল পণ্যের দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশী ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে সেগুলো দেখেন ও নিজেই ছবি তুলেন।
এক পর্যায়ে বেলা ১২টায় তদন্ত চলাকালেই তিনি (তদন্তকারী কর্মকর্তা) সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সকল কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তে কি পাওয়া গেছে তা এখন বলা যাবে না।’ তবে নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে অভিযান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদদ) হবিগঞ্জ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে, এ ব্যাপারে অভিযোগ গঠনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান হবিগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ৯৭ হাজার ৭শ’ ৪৮ টাকা। মালামাল ক্রয় বাবত ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮১ হাজার ১শ’ ৯ টাকা উত্তোলন করে নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাগুলো। কিন্তু যে সরঞ্জাম ক্রয় করা হয় বাস্তবে সেগুলোর বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকার বেশি নয় বলে দাবি করেন দরপত্র প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। সেই হিসেবে বাঁকি প্রায় ৭ কোটি টাকার পুরোটাই হয় ভাগ-বাটোয়ারা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রচার করলে নড়েচড়ে বসে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।