• Youtube
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

চুনারুঘাটে বিএমডব্লিউ গাড়ী নেয়া হয়েছে সিলেটে: চাবি পেলেও পায়নি কাগজপত্র

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের ভিতরে জব্দকৃত বিলাশবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ী নিয়ে সিলেটে রওয়ানা হয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় গাড়ীটি নিয়ে রওয়ানা হয় তারা। গাড়ীর মালিক গাজীউর রহমান ঢাকা থেকে চাবি প্রেরণ করলেও কোন কাগজ প্রেরণ করতে পারেননি। ফলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ গাড়ীটি নিয়ে যায়। চাবি দিয়ে গাড়ী চালানো না গেলে শনিবার বিকেলে পিকআপ দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ী। এ সময় শত শত উৎসুক জনতা সেখানে ভীড় জমায়।

শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে সিলেট শুল্ক গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তরের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে এই কার জব্দ করেছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লন্ডন প্রবাসী গাজীউর রহমান কার্নেট সুবিধায় কারটি দেশে এনে দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন। তিনি হবিগঞ্জ শহরে গাড়ীটি ব্যবহার করতেন। নিদিষ্ট মেয়াদ শেষে গাড়ীটি আর রাস্তায় না রেখে তিনি তার গ্রামের বাড়ীতে রেখে দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করলে সেখানে গাজীউর রহমানকে পাওয়া যায়নি । বাড়ীর লোকজন জানান কোন কাগজ এবং চাবি তাদের কাছে নেই। সেখানকার রাস্তা সরু হওয়ায় রেকার যেতে পারে না বলে গোয়েন্দা টিম সেটি স্থানীয় মেম্বার আব্দুল আলীর জিম্মায় রাখা হয়। সারারাত গাড়ীটি পাহারা দেয় চুনারুঘাট থানার দুই পুলিশ শনিবার সকালে গাড়ীটি শুল্ক বিভাগের হেফাজতে আনার জন্য গেলে জিম্মাদার চাবি দিলেও এতে কোন কাজ হয়নি। পরে পিকআপ এনে এটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত গাড়ীটির মডেল থ্রি জিরো ডি বিএমডব্লিউ এক্স ৫। ইন্টারনেটে দেখা যায় বৃটেনে এই গাড়ীর দাম ৫৭ হাজার থেকে ৭১ হাজার পাউন্ড। গাড়ীটি কার্নেট সুবিধায় বৃটেন থেকেই বাংলাদেশে আনা হয়েছিল।

সিলেট কাস্টম গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তরের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব জানান, আমরা গাড়ীটি জব্দ করে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের জিম্মায় রেখেছিলাম। মালিক ঢাকা থেকে জিম্মাদারের কাছে চাবি প্রেরণ করলেও কোন কাগজ বা ফটোকপি প্রদান করতে পারেননি। তাই গাড়ীটি আমাদের জিম্মায় নিয়ে এসেছি। এর মালিক আমাদের সিলেট অফিসে গিয়ে যদি বৈধ কাগজ দেখাতে পারেন তাহলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যথায় কাস্টমের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, আমাদের ধারনা গাজীউর রহমান এই গাড়ীর অন্ততপক্ষে দেড় কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন। চাবি দিতে পারলে কাগজ দেয়ার কোন সমস্যা ছিল না।

এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে শুল্কমুক্ত সুবিধায় নিয়ে আসা এসকল গাড়ি ব্যবহারে বাংলাদেশের আইন ভঙ্গ করায় বিদেশি কূটনীতিক ও সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হয়েছে। অনেক প্রবাসী এই সুবিধা নিয়ে মানি লন্ডারিং এর অপরাধ করেছেন। ইতোমধ্যে ৪০টি গাড়ী জব্দ করা হয়েছে।

শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, কারনেট সুবিধায় এসব গাড়ি নিয়ে আসার প্রধান শর্ত হচ্ছে ব্যবহার শেষে ওই কর্মকর্তা দেশে ফেরার সময় শুল্ক অধিদফতরকে অবহিত করে নিজ দেশে গাড়িটি ফেরত নিয়ে যাবেন। আর যদি গাড়ি তিনি হস্তান্তর বা বিক্রি করতে চান তাহলে সরকারি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী যথাযথ শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে তা হস্তান্তর করা যাবে। কিন্তু শুল্ক অধিদপ্তরকে অবহিত না করেই এসব গাড়ি গোপনে হস্তান্তর, ব্যবহার অথবা বিক্রি করে দিয়েছেন এসব কর্মকর্তা ও বিদেশিরা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসীরাও আছেন এমন তালিকায়।এসব গাড়ির মালিকদের অধিকাংশই বাংলাদেশি বংশদ্ভূত বিভিন্ন বিদেশি নাগরিক। তারা দেশে আসার সময় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি নিয়ে আসেন। কিন্তু, ফেরত যাওয়ার সময় গাড়িগুলো নিয়ে না গিয়ে শুল্ক কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই রেখে দেন অথবা বিক্রি করে দেন।

এদিতে গাজীউর রহমানের বাড়ীতে গাড়ী জব্দ করা হলেও সে বাড়ীতে না এসে চাবি প্রেরণ করে। আর বিষয়টিকে আড়াল করতে ঢাকায় তার আইনজীবী ও চুনারুঘাট পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাইকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় গাজীউর রহমানের মোবাইলে ফোন দিলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার সাথে থাকা আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল হাইকে এ সময় দুইবার ফোন দিলে তিনি কেটে দেন। পরে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করলেও তিনি কোন উত্তর দেন নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ