• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৪ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

মায়ের জন্য নয়া কাপড়ের পরিবর্তে নিজেই নয়া কাপড় পড়ে বাড়ি ফিরছে নজরুল

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯

এম,এ আহমদ আজাদ,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ): নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্র ভবঘুরে নজরুল ইসলাম(২০) দীর্ঘ দুই মাস পরে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে আজ। মায়ের জন্য নয়া কাপড়ের পরিবর্তে নিজেই সাদা নয়া কাপড় পড়ে বাড়ি ফিরছে,নিয়ে মায়ের বিলাপ চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৬ জনের মধ্যে মাদ্রাসা ছাত্র ভবঘুরে নজরুলের লাশ ও পরিচয় পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর)  দুপুরে পুলিশ তার মা বাবাকে মোবাইলে নজরুলের নিহত হবার কথা জানান।

ওই দিন দুপুরে নিহতের পরিবারের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত মাদ্রাসা ছাত্র হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইসলাম পুর গ্রামের হারুন মিয়ার পুত্র নজরুল ইসলাম(২০) কিভাবে সেখানে গিয়েছে তার মা-বাবা জানেন না। তারা জানান নজরুল ছিলো ভবঘুরে প্রকৃতির লোক। সে শ্রীমঙ্গলের একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া শেষ করে সেখানেই টমটম চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করতো। দুই মাস তিন মাস পর বাড়ি আসতো। সঠিক ঠিকানা কাউকে বলতো না কোথায় সে থাকে।

নজরুলের মা জোসনা বেগম জানান, “আমার লক্ষিন্দর(ছেলে) দুই মাস আগে আইলো, আবার আইলে আমার লাগি নয়া কাপড় আনবো, ‘আজকা আমার লক্ষিন্দর নয়া কাপড় পইরা বাড়ি আইবো ” বলে তিনি মুর্চা যাচ্ছি ছিলেন। অত্যান্ত হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান নজরুল।তার মা জোসনা বেগম আরো বলেন সে টমটম চালালো কখনও নিজের পরিচয় লোকাতো না। সে বলতো আমি গরিবের পুয়া(ছেলে) রিক্সা চালালে শরম নাই। তিনি বলেন গতকাল দুপুরে পুলিশ ফোন করে জানাইছে আমরা লাশ আনার লাগি, এখন তার বাপ চাচারা লাশ আনার লাগি যাইবা।

নজরুলের বাবা হারুন মিয়া জানান, চার ভাই এক বোনের মধ্যে নজরুল ছিলো সবার বড়। গত দুই মাস যাবৎ নজরুলের কোন খবর ছিলো না। তিনি কোন ফোন ব্যবহার করেন না তাই তার সাথে কোন কথা হয়নি। দুই মাস তিন মাস পরপর বাড়ি আসতো তাই আমরা খোঁজ নেই নাই। “আজকে যে আমার যাদু লাশ হয়ে আসবে সেটা কে জানতো”।

ইসলামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ জানান, নজরুল ইসলাম মাদ্রাসায় লেখা পড়া করলেও কখনো গ্রামে আসতো না। মাঝে মধ্যে আসলে দেখা হতো। সে খুবই গরিব পরিবারের সন্তান ছিলো, রিক্সা ও টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো, আবার ঐ টাকা জমিয়ে লেখাপড়া করেছে।

মঙ্গলবার সকালে নিহতের মা জুৎসা বেগমের মোবাইলে শ্রীমঙ্গল থেকে এক লোক মোবাইল ফোনে এখবর জানিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার এক পুলিশ অফিসারের মোবাইল নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। সাথে সাথে জুৎন্সা বেগম শায়েস্তাগঞ্জ থানায় ওই পুলিশ অফিসারের মোবাইলে যোগাযোগ করলে পুলিশ ঘটনা নিশ্চিত করে ঘটনা স্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ শনাক্তের জন্য অনুরোধ করেন।

সাথে সাথে নিহত যুবকের পিতা হারুন মিয়া ও মাতা জুৎন্সা বেগম শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্ট্রেশনে পৌছে তাদের ছেলে নজরুল মিয়া বলে নিশ্চিত করেছেন।

নিহত নজরুল মিয়া ৪ ভাই ১ বোনের মধ্যে সে ৩য় ছিল। সে দীর্ঘদিন শ্রীমঙ্গল একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় থাকা অবস্থায় শ্রীঙ্গল এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় হলে পড়া লেখা বাদ দিয়ে ওই ব্যক্তির ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। এখবর লিখা পর্যন্ত নিহতের মরদেহ গ্রহণ করতে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্ট্রেশরে পরিবারের লোকজন পৌছেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ